Header Ads

মুহাম্মাদ(সা) কি তবে সুপার হিউম্যান ছিলেন ?




মুহাম্মাদ(সা) কি তবে সুপার হিউম্যান ছিলেন ?


যদি কেউ বলে যে, মুহাম্মাদ(সা) আল্লাহর মনোনীত নবী ছিলেন না। তাহলে বলতে হবে, মুহাম্মাদ(সাঃ) সুপার হিউম্যান(অতি মানব) ছিলেন। কারনঃ
১/ রাসুল(সঃ) তো বলতেই পারতেন যে তার কারনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার পালক চাচা,নানা এবং পিতা মাতাকে মাফ করে দিবেন বা দিয়েছেন।কিন্তু তিনি সেটি বলেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
২/ রাসুল(সঃ)এর কি দরকার ছিল সবাইকে এক আল্লাহর উপাসনা করতে বলা। মক্কার কাফেররা তো আল্লাহ ছাড়াও অন্য দেব দেবিদের উপাসনা করত। রাসুল তো বলতেই পারতেন, তিনি আল্লাহর রাসুল। অন্য দেবদেবিকে মানলেও কোন সমস্যা নাই। কিন্তু আল্লাহই সবচেয়ে বড়।  তাহলে মক্কার কাফেররাও খুব সহজেই সেটি মেনে নিত। কিন্তু তিনি তা বলেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
৩/ রাসুল(সঃ) তো বলতেই পাড়ত, আমাকে সিজদা করলে আল্লাহকে সিজদা করা হবে বা যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাও তারা আমাকে টাকা পয়সা বা স্বর্ণ দাও। কিন্তু তিনি তা বলেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
৪/ মক্কার কাফেররা তো তাকে সত্যের পথ থেকে সরে আসতে অনেক প্রলভন দেখিয়েছেন। রাসুল(সঃ) তো সেগুলি গ্রহন করতেই পাড়তেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহন করেননি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল।
৫/ রাসুল(সঃ) তো বলতেই পাড়তেন যে সে সাধারন মানুষ না, সে নুরের তৈরি বা ফেরেস্তার মানুষ রুপ। কিন্তু তিনি তা বলেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
৬/ রাসুল তো বলতেই পাড়তেন যে সে ইহুদীদের নবী মুসা(আঃ) থেকেও বড়, কিন্তু মুসলিমরা যখন রাসুল(সঃ)কে মুসা(আঃ) থেকে বড় বলা শুরু করতেন, তখন রাসুল(সঃ) সেটি বলতে নিষেধ করেছিলেন। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
৭/ রাসুল তো বলতেই পাড়ত, যে তার পুত্রের মৃত্যুর কারনে সূর্য গ্রহন হয়েছে। কিন্তু তিনি তা বলেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি মিথ্যা বলতেন না।
৮/ রাসুলতো কোরআনের সূরা আবাসা ৮০ঃ ১-১৬ আয়াতে  রাসুল(সঃ) এর যে ভুল(human error) আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রকাশ করেছে তা লুকাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি সত্যি লুকাতেন না।
৯/ রাসুলতো ১৩ টি না ১৩০ টি বিয়ে করে পাড়ত ,তাও ১২ জনই বিধবা ছিলেন। তিনি ১৩০ জনই কুমারি আরবের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের বিয়ে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল। তিনি শুধু কুমারি আয়সা(রাঃ) বিয়ে করেছিলেন তাও তার পিতা আবু বকর(রাঃ) দেয়া প্রস্তাবের কারনে।
১০/ রাসুল মক্কা দখলের পড় সবাইকে মাফ করে দেয়, তিনি তা না করে শুধু নিজের আত্মীয় বা কোরাইশদের রেখে বাকিদের হত্যা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি। কারন তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসুল।
১১/ তায়েফে যখন তাকে পাথর নিক্ষেপ করা হয় তখন তিনি তাহেফবাসিকে ফেরস্তাদের দিয়ে চাপিয়ে হত্যা করেন নি বা তাদের প্রতি বদ দোয়া করেন নি। বরং তাদের প্রতি তিনি দুয়া করে ছিলেন “আমি আশা করি এদের মধ্যে থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এমন কাউকে জন্ম দিবেন যে এক আল্লাহর উপাসনা করবে”। তার দুয়া কবুল হয়েছে।
১২/ সত্যি প্রচারনার কারনে তার নিজ আত্মীয়স্বজনরা তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করেলেও তিনি সত্যি প্রচারে পিছ পা হননি বা তাদের সাথে কোন negotiationও করেন নি। এজন্য তাকে অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। এমনকি তাকে হত্যা করতে চেষ্টা করা হলে তিনি মদিনাতে হিজরত করেন তবুও তিনি সত্যি প্রচারে পিছ পা হননি।
১৩/ তিনি নামাজে ভুল করেছিলেন এবং তা স্বীকার করে সাহু সিজদা দিয়েছিলেন। তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হল ৪রাকাত নামাজ কি ছোট করে ২ রাকাত করার আদেশ হয়েছে? তখন তিনি বললেন নি যে নামাজ ২ রাকাত করার আদেশ হয়েছে।যদি তিনি বলতেন তবে সবাই তা মেনে নিত। কিন্তু তিনি ছিলেন প্রকৃত নবী । তিনি মিথ্যা বলতেন না। তাই তিনি ভুল স্বীকার করে সাহু সিজদা দিয়ে বাকি দুই রাকাত আদায় করেছিলেন।
১৪/ তিনি প্রতিদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ৭০বার ক্ষমা চাইতেন।তিনি বলতেই পারতেন যে, তার ক্ষমা চাওয়ার কোন দরকার নাই।
১৫/ যদিও সে সময় প্রায় সব সাহাবিরা মদ পান করত কিন্তু তারপরও তিনি মদ্য পানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে।তিনি প্রকৃত নবী না হলে এটা করতেন না। যেমন মিথ্যা নবী মুসায়লামা মদ পানকে হালাল করে দিয়েছিল। নামাজ ৫ রাকাত থেকে কমিয়ে ২ রাকাত করে দিয়েছিল, রুকু ও সিজদা বাতিল করেছিল, তার অনুসারিরা নামাজে কতা বলত। মিথ্যা নবী মুসায়লামা রোজা ও যাকাত দেয়াকেও বাতিল করে দিয়েছিল।
১৬/রাসুল(সাঃ) স্বীকার করেছিলেন যে তাকে জাদু করা হয়েছে। তিনি তা চেপে যেতে পারতেন এবং বলতে পারতেন যে তিনি জাদুর প্রভাবমুক্ত।
১৭/ ইহুদিরা তাকে রুহ সম্পরখে জিজ্ঞাসা করলে তার উপর নাজিল হয়ঃ “তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিনঃ রূহ আমার পালনকর্তার আদেশ ঘটিত। এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে” (বনি ইসরাইল : ৮৫)
তিনি যদি প্রকৃত রাসুল না হতেন তাহলে বানিয়ে বানিয়ে অনেক কিছুই বলতে পারতেন।কিন্তু তিনি তা করেন নি। কারন তিনি ছিলেন প্রকৃত রাসুল।
১৮/ তাকে কিয়ামতের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন এটি হবে তবে কবে হবে সে সম্পর্কে জানে শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।তিনি বানিয়ে যে কোন একটা সময় বলে দিতেই পারতেন যদি তিনি প্রকৃত রাসুল না হতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি কারন তিনি ছিলেন প্রকৃত রাসুল।
১৯/ রাসুল(সাঃ) কখন বলেন নি তিনি ভবিষ্যৎ বা গায়েব জানেন। তিনি ততটুকুই ভবিষ্যৎবানি করেছেন যতটুকু আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে জানিয়েছেন এবং সকল  ভবিষ্যৎবানি সত্য হয়েছে।
২০/ প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়া বেশ দুরহ ,তিনি যদি প্রকৃত নবী নাই হতেন তাহলে কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুস্তির জন্য ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন??? সাথে আরও অনেক সুন্নাত নামাজ এবং তাহাজ্জুদ নামাজও পরতেন। রাসুল(সাঃ) অনেক দীর্ঘ সময় নামাজ পরতেন,ফলে তার পা ফুলে যেত।
২১/ তিনি যদি প্রকৃত নবী নাই হতেন তাহলে কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির জন্য দীর্ঘ ২৯-৩০ দিন রোজা রাখতে বলতেন এবং তারাবির নামাজ পরতে বলতেন।যারা তারাবির নামাজ পড়েছেন তারা জানেন যে, রমজান মাসে সারাদিন রোজা রেখে তারপর ২ ঘণ্টার উপর তারাবীর নামাজ আদায় করা বেশ দুরহ কাজ।
২২/ এক ছেলে তার সাথে জিহাদে যেতে চাইলে তিনি বলেন যে, তোমার বৃদ্ধ পিতা মাতা আছে, তাদের সেবা কর। তিনি যদি প্রকৃত নবী নাই হতেন তাহলে বলতেন, আমার জন্য জিহাদ কর, আমি জান্নাতের নিয়ে যাব। বৃদ্ধ পিতা মাতার চিন্তা করতে হবে না।
২৩/ জিহাদের ময়দানেও তিনি নামাজ পড়তেন এবং তার সাহাবীদের জন্য তা বাধ্যতামূলক ছিল।তিনি যদি প্রকৃত নবী নাই হতেন তাহলে কার সন্তুষ্টির জন্য এগুলো করতেন?
২৪/ রাসুল(সাঃ) যদি আল্লাহর প্রকৃত রাসুল না হতেন তবে তার কি দরকার ছিল কন্যা শিশুদের জ্যান্ত কবরের বিরোধিতা করার? তিনি কেন বলতে যাবেন যে, কন্যা হচ্ছে সৌভাগ্য। যে তার কন্যাকে ঠিক ভাবে লালন পালন করবে সে জান্নাতে যাবে।
২৫/রাসুল(সাঃ) যদি আল্লাহর প্রকৃত রাসুল না হতেন তবে তিনি কেন নারীদের সম্পত্তির উপর অধিকার দিতে গেলেন? তিনি কেন নারীদের সিধান্ত নেয়ার অধিকার দিতে গেলেন? রাসুল(সাঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে ভাল যে তার স্ত্রীর নিকট ভাল। তিনি ছিলেন আল্লাহর প্রকৃত রাসুল।
২৬/ তিনি ছিলেন আরব, তাহলে তিনি বলতেই পারতেন পৃথিবীতে আরবরাই শ্রেষ্ঠ। নেতা কেবল আরবরাই হতে পারবে। কিন্তু তিনি বলে গেছেন, কালো,সাদা, আরব, অনারব সবাই সমান। শ্রেষ্ঠত্বের পরিমাপক হচ্ছে “তাকওয়া”।
২৭/ তিনি দাস মুক্ত করা অনেক বড় সাওয়াব বলে গেছেন আর নিজে দাসদের কিনে মুক্ত করে দিতেন? তিনি জানিয়েছেন, একজন দাস মুক্ত করলে দাসের শরীরের বদলে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তকারীর  শরীর মুক্তি পাবে। কিন্তু পুরোপুরি ভাবে দাসপ্রথা নির্মূল করা সম্ভন ছিল না। কারন যুদ্ধবন্ধিদের দাস বানানো হত। সেই যুগে জেলখানা ছিল না। আর যুদ্ধবন্ধি দাসদের কাজে লাগানো হত। বর্তমান যুগের মত জেলখানায় বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো হত না।
২৮/ বর্তমান যুগে তো অনেক জ্ঞানী মানুষজন আছে, কম্পিউটার আছে, ইন্টারনেট আছে। পারলে সবাই মিলে আল-কুরানের মত একটা বই বানিয়ে দেখান। গত ৪০০০ বছরের ইতিহাসে এ রকম কোন বই পাওয়া যায় নাই।
২৯/ রাসুল(সাঃ) তো লিখতে বা পরতে পারতেন না। একারনে আল-কোরানের বানিগুলি তার সাহাবিরা লিখে এবং মুখস্ত করে রাখতেন। তাহলে রাসুল(সাঃ) কিভাবে ইহুদি এবং খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে থাকা সকল ইতিহাস জেনে গেলেন। একারনেই সেসময়ে অনেক ইহুদি এবং খ্রিস্টান পণ্ডিতরা ইসলাম গ্রহন করেন।
৩০/ রাসুল(সাঃ) যখন বললেন তিনি একরাতে মক্কা থেকে বায়তুল মোকাদ্দিসে গিয়েছেন এবং সেখান থেকে এবার ফিরে এসেছেন (মিরাজের ঘটনা), তখন অনেক মুসলিমরাও তাকে অবিশ্বাস করল। কারন এটা ছিল শত শত মাইলের পথ । তখন যে ইহুদি পণ্ডিতরা আগে বায়তুল মোকাদ্দিসে গিয়েছিল তারা রাসুল(সাঃ)এর পরিক্ষা নিতে আসে।  রাসুল(সাঃ) বলতেই পারতেন যে, তিনি মক্কা থেকে মিরাজে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি ইহুদি পণ্ডিতদের নেয়া পরিক্ষায় অংশ নেন এবং উত্তীর্ণ হন এবং প্রমাণ করেন তিনি প্রকৃত রাসুল।

৩১/ তিনি সুদকে কেন নিসিদ্ধ করতে গেলেন। সে সময়ে অনেকেই সুদের বাবসা করত । যারা এই নির্দেশের কারনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ………
৩৩/ রাসুল(সাঃ) যদি আল-কুরান রচনা করতেন তাহলে আল-কুরানে যে চালেঞ্জ আছে যে, “পারলে এই কুরআনের একটি সূরার মত কোন সূরা তোমরা সবাই মিলে বানিয়ে দেখাও”, এমন  চালেঞ্জ করার সাহস করতেন না। এখন পর্যন্ত ২জন কবি চেষ্টা করতে গিয়ে বিফল হয়ে নিজেরাই ইসলাম গ্রহন করেছেন ।
৩২/ ইতিহাস সাক্ষী সকল নবিকেই তাদের জাতিকে যখন সঠিক পথের দাউয়াত দেয় তখন তারা অস্বীকার করে। তাদের বিশ্বাস করাতে অলৌকিক কিছু দেখাতেই হয়েছে।আমাদের রাসুল(সাঃ) তেমনি অলৌকিক কিছু নিশ্চয়ই দেখিয়েছেন।কারন হাজার হোক সুধু মুখের কথায় ছিরা ভিজে না।

৩৩ / রাসুল(সাঃ) করা ভবিষ্যৎবানির প্রায় ৭০% পূর্ণ হয়েছে রাসুল(সাঃ) জিবিত অবস্থায় এবং তার মৃত্যুর পর।
জীবিত অবস্থায় করা ভবিষ্যৎবানিঃ বদরের যুদ্ধে বিজয়, মক্কা বিজয়, রোমানদের হাতে পারস্য বিজয় সহ আরো অনেক ভবিষ্যৎবানি।
রাসুল(সাঃ)এর মৃত্যুর পর পূর্ণ হওয়া ভবিষ্যৎবানি সমূহঃ ফাতিমা(রাঃ) মৃত্যু, ওসমান(রাঃ) শাহাদাত, সাদ(রাঃ)এর বিজয়, মুসলিমদের হাতে রোম,পারস্য এবং জেরুজালেম বিজয়, মঙ্গোলীয়দের আক্রমন, শেষ জামানায় পৃথিবীর অবস্থা,মুসলিমদের অবস্থা,মুসলিম শাসকদের অবস্থা ইত্যাদি।
আর বাকি প্রায় ৩০% এখনও পূর্ণ হতে বাকি। যেমনঃকিয়ামতের পূর্বে ইমাম মেহেদি এবং ইসা(আঃ)এর পুনরায় আগমন, ইয়াজুজ মাজুজ, দাজ্জালের আগমন, কিয়ামত ইত্যাদি। এগুলো ইনশাআল্লাহ পূর্ণ হবে।
নাস্তিক এবং কাফেরদের দাবি মুহাম্মদ(সাঃ) ভণ্ড নবী(নাউজুবিল্লাহ) কিন্তু খুব বুদ্ধিমান লোক ছিলেন।
আমার প্রস্নঃ মুহাম্মদ(সাঃ) যদি ভণ্ড নবী(নাউজুবিল্লাহ) কিন্তু খুব বুদ্ধিমান লোক হতেন, তাহলে কি তিনি এত ভবিষ্যৎবানি করার ঝুকি নিতেন?
কারন এগুলো ভুল হলে তো তার তৈরি করা ধর্ম(যেমনটা নাস্তিক এবং কাফেরদের দাবি করে) মিথ্যা প্রমানিত হয়ে যেত।
নিশ্চয়ই মুহাম্মদ(সাঃ) আল্লাহর বান্দা এবং নবী।

৩৪/রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর সারা জীবনে কোন কবিতা লিখে নাই, কিন্তু হটাত করে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “গীতাঞ্জলী” রচনা করে ফেলছে।
কাজী নজরুল ইসলাম সারা জীবনে কোন কবিতা লিখে নাই, কিন্তু হটাত করে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “অগ্নিবীণা” রচনা করে ফেলছে।
মাইকেল মধুসুদন দত্ত সারা জীবনে কোন কবিতা লিখে নাই, কিন্তু হটাত করে বিখ্যাত কবিতা “মেঘনাথ বধ” রচনা করে ফেলছে।
সেক্সপিয়ার সারা জীবনে কোন কবিতা লিখে নাই, কিন্তু হটাত করে বিখ্যাত নাটক “রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট” বা তার অন্য কোন একটা বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ রচনা করে ফেলছে।
কথাগুলি কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? যদি না হয় তাহলে রাসুল(সাঃ) আল-কুরান লিখেছে এটা কিভাবে বিশ্বাসযোগ্য হয়?
আর রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর,কাজী নজরুল ইসলাম,মাইকেল মধুসুদন দত্ত, সেক্সপিয়ার এদের কারো সাহস হয় নাই চ্যালেঞ্জ করার। কিন্তু আল-কুরানে গত ১৪০০ বছর যাবত চ্যালেঞ্জ দেয়া আছে যে, পারলে সবাই মিলে এর মত একটা কবিতা বানিয়ে দেখাও। গত ১৪০০ বছরে কেউ পারে নাই।
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর,কাজী নজরুল ইসলাম,মাইকেল মধুসুদন দত্ত, সেক্সপিয়ার এদের লিখা কবিতাগুলি শুধুই শুনতে সুন্দর
কিন্তু তাদের লিখা কবিতায় কোন ভবিষ্যৎবানী নাই, না আছে তেমন শিক্ষণীয় কিছু আর বৈজ্ঞানিক সত্য বা সম্পূর্ণ জীবন বিধান তো অনেক দুরের বিষয়।
যারা যুক্তি মানে না, আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়।
৩৫/ আল-কোরআনে ওপেন চ্যালেঞ্জ এবং দুটি ঘটনা :
১. লবিদ বিন রাবিয়া। তৎকালীন আরবের শেষ্ঠ কবি। তার শক্তিশালী ভাষা আর তেজোদিপ্ত ভাব তাকে সারা আরবে পরিচিত করে তুলেছিল। উনি যখন কোরআনের এই চ্যালেঞ্জের কথা জানলেন তখন জবাবে একটি কবিতা রচনা করে কাবা শরীফের চৌকাঠের উপর ঝুলিয়ে রাখলেন। পরে একজন মুসলমান কোরআনের একটি সূরা লিখে ঐ কিতাবের পাশে ঝুলিয়ে দেন।
লবিদ পরের দিন কাবার দরজায় এলেন এবং ঐ সূরা পাঠ করলেন। অত:পর বললেন, “নি:সন্দেহে এটা মানুষের কথা নয় এবং আমি এর উপর ইমান আনলাম” অত:পর তিনি প্রকাশ্য কালেমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন। তিনি কোরআনের ভাব আর ভাষায এতো বেশী প্রভাবান্নিত হন যে, পরবর্তীতে তিনি আর কোনদিন কোন কবিতাই রচনা করেন নি।
২. দ্বিতীয় ঘটনাটি হল ইবনে মুকাফ্ফা এর। যা ঘটে কোরআন নাযিলের প্রায ১০০ বছর পর। এই ঘটনা প্রথমটির চাইতেও চাঞ্চল্যকর। এই ঘটনা সম্বন্ধে প্রাচ্যবিদ Wollaston বলেন “That Muhammad is boast as to the literary excellence of Quran was not unfounded is further evidence by a circumstance which occurred about a century after the establishment of Islam”
ঘটনাটি এরকম, ধর্মবিরোধীদের একটি সংগঠন সিদ্ধান্ত নিল ওরা কোরআনের অনুরুপ একটি বই লিখবে। এই লক্ষে ওরা ইবনে মুকাফ্ফার (মৃত্যু-৭২৭ খৃ) কাছে এলো। যিনি ছিলেন ঐ সময়ের সবথেকে জ্ঞানী, প্রখ্যাতি সাহিত্যিক এবং বিষ্ময়কর প্রতিভার অধিকারী। তিনি তার নিজের কাজের উপর এতো বেশী আস্থাবান ছিলেন যে উনি সাথে সাথে রাজি হয়ে যান। এবং বলেন এক বছরের মধ্যে তিনি কাজটি করে দিবেন। শর্ত ছিল এই এক বছরকাল সময়টা যাতে তিনি পুরোপুরি মনোযোগের সাথে সূরা রচনা চালিয়ে যেতে পারেন এ জন্য তার যাবতীয় সাংসারিক আর অর্থনৈতিক কাজের দায়িত্ব সংগঠনটিকে নিতে হবে।
ছ’মাস পেরিয়ে গেলে সঙ্গিরা কি পরিমান কাজ হয়েছে জানার জন্য তার কাছে এলো। তারা দেখতে পেল বিখ্যাত ঐ ইরানী সাহিত্যিক অত্যন্ত ধ্যানমগ্ন অবস্থায় হাতে একটি কলম নিয়ে বসে আছেন; তার সামনে রয়েছে একটি সাদা কাগজ এবং কক্ষের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছিড়েফারা কাগজের স্তুপ। অসীম প্রতিভাধর, যাদুকরী ভাষার অধিকারী ঐ ব্যাক্তি আপন সর্বশক্তি ব্যায় করে ছয়মাস চেষ্টা করে কোরআন তো দূরের পথ একটি আয়াতও রচনা করে উপস্থাপন করতে পারেন নি।
যা হোক শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত লজ্জিত ও নৈরাশ্যমনে তিনি কাজে ইস্তফা দেন। এই ঘটনাটি ঘটেছিল কোরআন নাযিলের ১০০ বছর পর। কুরআনের ঐ চ্যালেঞ্জ কত শতাব্দি পেরিয়ে গেছে আজো বিদ্যমান। এই চ্যালেঞ্জ থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত।
সত্য প্রত্যাখানকারীরা কি ভেবে দেখে না পৃথিবীর তাবত তাগুতি শক্তি কিভাবে পরাজিত হয়ে আছে কোরআনের কাছে ?

তারপরও যারা মনে করেন রাসুল(সাঃ) তেমন কিছু করেন নাই। তাদের বলব যে , পারলে নিজে একটা ধর্ম প্রতিষ্ঠিত করে দেখান। এবং সেটা এমন এক জায়গায় যেখানকার মানুষ যোদ্ধা এবং খুন করতে দ্বিধা করে না, যেখানকার মানুষ জাহিলিয়াতে হাবু ডুবু খাচ্ছে এবং সেখানে তাদের প্রচলিত বাপ দাদার ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।

No comments

নাঈম রেজা. Powered by Blogger.